এজলাসে বাদী-বিবাদীর মারামারি, আটক ৩

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ

কক্সবাজারের আলোচিত মোরশেদ আলী ওরফে মোরশেদ বলী হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তারা আত্মসমর্পণকালে আদালতের এজলাসে আসামি ও বাদীপক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহাজাহান নূরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শাহাজাহান নূরী বলেন, ‘বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোরশেদ বলীহত্যা মামলার প্রধান আসামি আব্দুল মালেক ও ৩ নাম্বার আসামি কলিম উল্লাহ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আসেন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলমগীর ফারুকীর আদালতের ভেতরেই মামলার বাদী ও বিবাদীপক্ষ হাতাহাতি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে লিপ্ত হন। এজলাসে অরাজক পরিবেশ তৈরি করে তারা। পরে এ ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার দায়ে তিনজনকে পুলিশ আটক করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আত্মসমর্পণ করা আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আর আদালতের এজলাসে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে নিহত মোরশেদ বলীর ভাই মো. সাজ্জাদ ও মো. জাহেদ এবং একই এলাকার আরিফ উল্লাহ নামে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।’

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস জানিয়েছেন, মোর্শেদ বলী হত্যা মামলার দুই আসামি উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্ণ করতে আসেন। ওই আসামিরা আদালতে আসলে বাদীপক্ষের লোকজনের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। ঘটনাটি দেখে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় আটক তিনজনই নিহত মোরশেদ বলীর পরিবারের সদস্য। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো এজাহার আসেনি। এজাহার এলে মামলা নঁথিভুক্ত করে আটকদের কারাগারে পাঠানো হবে।

কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহাজাহান নূরী বলেন, ‘আটকদের বিরুদ্ধে কোর্টে দায়িত্বপালন করা পুলিশই নিয়মিত মামলা রুজু করার প্রক্রিয়া চলছে।’

গত ৭ এপ্রিল কক্সবাজার সদরের পিএমখালী এলাকার চেরাংঘাট বাজারে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মোরশেদ আলী ওরফে মোরশেদ বলীকে। এই ঘটনায় ২৬ জনকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়। এ মামলায় একের পর এক অঘটন ঘটেই যাচ্ছে। ইতিপূর্বে ২ নং আসামীকে ২২ নং বানিয়ে মামলার কাগজ জালিয়াতি করে এক আসামী জামিন নিয়ে আদালত পাড়ায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। ফলে কক্সবাজার বিচার বিভাগের সতর্কতা অবলম্বনে এবং জালিয়াতি প্রতিরোধে মামলার সহিমুহুরী নকল সরবরাহের ক্ষেত্রে নির্দেশনা জারি করেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট। আসামীরা আত্মসমর্পণের সময় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে আসামিপক্ষের সাথে নিহত মোরশেদ বলির পরিবারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পুনরায় বিতর্কের জন্ম দেয়। ফলে আদালত পাড়ায় পক্ষে বিপক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

Leave a Reply