পেকুয়ায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার,পালালো স্ত্রী

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মো.রিদুওয়ান (৩৫) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাজারপাড়া এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রিদুওয়ান রাজাখালী ইউনিয়নের নতুনঘোনা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি দু’সন্তানের জনক।

এদিকে রিদুওয়ানের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের দানা বেঁধেছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানান গুঞ্জন এবং আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার স্ত্রী এমনটাই দাবি করেছেন নিহতের স্বজনেরা।

স্থানীয়রা বলেন,প্রায় দেড় বছর আগে মগনামা  বাজারপাড়া(পুরাতন সিকদার বাজার)গ্রামের নুরুল আমিনের মেয়ে রুমি আক্তার (২২) সাথে বিয়ে হয় রিদুওয়ানের। বাজার পাড়ায় ঘর বেঁধে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন রিদুওয়ান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ১২টার দিকে জানতে পারি রিদুওয়ান মারা গেছে। তবে স্ত্রী রুমি ঘরের ভিতুরে স্বামীর লাশ রেখে দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।

স্হানীয়রা পুলিশে খবর দিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে তালা ভেঙে লাশ উদ্ধার করেছে।  নিহতের স্বজন মো.কালু বলেন,রুমিকে নিয়ে বাজারপাড়া থাকতেন রিদুওয়ান। এটি তাদের দ্বিতীয় বিয়ে। রুমা আক্তার নামে তার প্রথম স্ত্রী ও দু’সন্তান রয়েছে। তারা রাজাখালী ইউনিয়েনের ০৮ নং ওয়ার্ড়  নতুনঘোনায় থাকেন। রিদুওয়ান মাঝে মধ্যে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুমির কাছে আসা যাওয়া করতো।

নিহতের স্বজনরা জানায়,রুমি স্বামীর অবাধ্য ছিলো। অনৈতিক কাজে জড়িত। এনিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝড়গা লেগেই থাকতো। তবে রুমিকে ভালো পথে আনার প্রানপন চেষ্টা করতেন তার স্বামী রিদুওয়ান। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দাবি করছেন তারা। ছাত্রলীগ নেতা ও নিহতের স্বজন সালাহ উদ্দিন রানা বলেন, রিদুওয়ান মাটি সরবরাহ ব্যবসায় জড়িত। রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে একটি অর্ডারের জন্য রিদুওয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিই। রিসিভ করেনি। পরে আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তির মোবাইল থেকে মুঠোফোনে কল দিলে রিদুওয়ানের স্ত্রী রিসিভ করে মোবাইল রেখে রিদুওয়ান বাহিরে গেছে বলে সংযোগ কেটে দেন। পরে শুনেছি রিদুওয়ানের মরদেহ ঘরে রেখে স্ত্রী পালিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন,রুমি স্বামীর অবাধ্য ছিল। তাকে হয়তো হত্যা করেছে। নয়তো পালিয়ে গেছে কেন রুমি। এছাড়া রিদুওয়ান তার অবাধ্য স্ত্রীকে নিয়ে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন। আরো জানাযায় ঘাতক রুমি আক্তার গত দেড় মাস আগে কক্সবাজার কারাগার থেকে জামিনে বের হন। মগনামা বাইন্যাঘোনা এলাকার আবদুল মালেক হত্যা মামলায় তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন।

গত বছরের ২৮ আগস্ট আবদুল মালেক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন। ওই মামলার ৫নং আসামি রুমি আক্তার। স্বামী রিদুওয়ান তার মালিকানাধীন পিকআপ গাড়ি বিক্রি করে ওই টাকা দিয়ে তার জামিনের ব্যবস্থা করেছিলেন।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আবুল খায়ের আজাদ জানায়,শরীরে কোন ধরনের আঘাত পাইনি। তবে মুখে বিষের গন্ধ রয়েছে। হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন তিনি।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন,আমি ঘটনাস্থল গিয়েছি। রাত আনুমানিক ১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করেছি। ঘরের খাটের ওপর ছিল মরদেহ। স্ত্রী সটকে পড়ছে। এখনো কিছু বলা যাচ্ছেনা। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply