আবদুল আজিজ:
প্লাষ্টিকের দূষণ কমিয়ে কক্সবাজারকে আধুনিক শহরে গড়ে তোলা সম্ভব। তা নাহলে বিষাক্ত রাসায়নিক মানব দেহের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এজন্য প্লাষ্টিকের বদলে পাটজাত প্যাকেট উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান করতে হবে বলে গুরুত্বারোপ করেছেন পরিবেশবিদরা।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার শহরে একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে প্লাষ্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ অংশীদারজন নিয়ে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালাটি আয়োজন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তর। এতে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রানালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন- ‘বাংলাদেশের মৌলিক আইন সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবে (পঞ্চদশ সংশোধনী)।” অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের মেন্ডেট হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বণ্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করা। আর এ কাজটি করার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণায় হলো পরিবেশ, বন ও জলবায়ুু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিদপ্তর হলো পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ বলেন- ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাষ্টিকের ব্যবহার বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে পলিথিন/প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদনকারি সকল কারখানা এবং এক বছরের মধ্যে উপকূলীয় সিঙ্গেল প্লাস্টিক (এসইউপি) পরিবহন, বিক্রয়, ব্যবহার, বাজারজাতকরণ বন্ধসহ একই সময়ের মধ্যে সকল হোটেল, মোটেল এবং রেস্টুরেন্টেও এর ব্যবহার বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও কঠোর এনডোর্সমেন্টের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ২০১৫ সাল হতে মার্চ ২০২১ সাল মোট ২৮৯৭ টি অভিযান পরিচালনা করে ৫৯৫৪ টি মামলা করে ২০.৮১ কোটি টাকা ধার্য করে ১৭.৫৯ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। কোভিডকালীন শুধুমার জানুয়ারি ২০১১ হতে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত প্লাস্টিক/পলিথিনের বিরুদ্ধে ১০৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪১.৩৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
কর্মশালার শুরুতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী আবু তাহেরের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালা প্লস্টিক দূষণের ওপর তিনটি প্রবন্ধ ও ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করেন।
কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বজ্য ও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, ইউনিডো বাংলাদেশের পরিচালক ড. জাকিউজ্জামান, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের স্পেশালিস্ট বুশরা নিশাত, কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম তারিকুল আলম ও কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের, সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ ও বিভিন্ন দপ্তর, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ সহ অনেকে। বক্তরা সিঙ্গেল প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো, সাগর ও নদ-নদীকে প্লাস্টিক দূষণ মুক্ত রাখা এবং সচেতনতার ওপর জোর দেওয়া হয়।