স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাঙালির অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু কখনো আপোষ করেননি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিকে পাকিস্তানের শাসন-শোষণ, জুলুম-অত্যাচার, নির্যাতন এবং সকল বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে ও তাদের অধিকার আদায়ে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি নিজে অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও লাঞ্চিত হয়েছেন কিন্তু মানুষের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও কোনো আপোষ করেননি।
আজ বিকেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আয়োজিত আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। নগর ভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের অধিকারের জন্য কাজ করছে। তিনি ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। দেশকে দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হয়েছেন। সকল খাতে আজ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের অগ্রযাত্রাকে যারা বাধাগ্রস্থ করছে তাদের মোকাবিলা করতে হবে। সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে এবং দেশকে স্থিতিশীল রাখার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
শুধু উন্নয়নই নয়, বিজয়ের স্বার্থকতার জন্য চেতনা ও মূল্যবোধের উন্নতিও ঘটাতে হবে বলে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘শুধু উন্নয়ন দিয়ে জাতি গঠন হয় না। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে উন্নয়ন দিচ্ছে। তিনি জাতি গঠনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমাদের চেতনা, আমাদের মূল্যবোধের এখন পর্যন্ত উন্নতি ঘটেনি। আমাদের সবার এই চেতনা এবং মূল্যবোধের উন্নতি ঘটাতে হবে। বিজয়ের দিনে এটাই আমাদের সংকল্প।
পরিবার থেকে সন্তানকে চেতনা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়ার আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, যতটুকু সময় আপনারা পাবেন, আপনারা সন্তানদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিক্ষা দিন। তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলুন, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের শিক্ষা দিন। এটুকু শিক্ষা যদি সে পায়, তাহলেই আমাদের বিজয় সার্থক হবে।
চেতনা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ’৯০ এর দশকে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, আমি দেখেছি- বিজয় দিবসে প্রত্যেক বাসায় জাতীয় পতাকা উড়তে। প্রত্যেক গাড়িতে, রিক্সায়, সিএনজিতে, বেবি ট্যাক্সিসহ সব জায়গায় পতাকায় সয়লাব হয়ে যেতো। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে আরম্ভ হয়ে যেত – বাসা, মহল্লায়, পাড়ায় শুধু পতাকা আর পতাকা। আজকে আসার সময় কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক ভবন ছাড়া তেমন কোন পতাকা আমরা দেখলাম না। এটা কিন্তু আমাদের উপলব্ধি, আমাদের চেতনার অবক্ষয় হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসসিসি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামান।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম এবং মেয়র প্যানেলের প্রথম সদস্য মো. শহিদ উল্লাহ মিনু বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরসহ কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷
আলোচনা সভা শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।