ভাই রাসেলের ২১ দিন পর চলে গেল টুম্পাও

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে অসুস্থতার কারণে টুম্পা নামে এক সিংহীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ১২ বছর বয়সের সিংহীটি মারা যায়।

গত দুই মাস আগে সিংহীটির অসুস্থতা শনাক্ত হয়। পেটের দিকে পানি জমে থলির মতো অংশ ঝুলে থাকতে দেখা যায়। সিংহীটির শারীরিক অসুস্থতা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই নিয়মিতভাবে ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এর আগে রাসেল নামে আরও একটি সিংহের মৃত্যু হয়। তারা সম্পর্কে পরস্পর ভাই-বোন হয়।

সিংহ ‘রাসেল’ ও সিংহী ‘টুম্পা’। তারা পরস্পর ভাই-বোন। উভয়ের জন্ম কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। ২০০৭ সালে রাসেল ও ২০০৮ সালে টুম্পা জন্মগ্রহণ করেন। ভালোই কাটছিলো তাদের দিনকাল। হঠাৎ নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দেয় তারা। শারীরিক ওজন কমতে থাকে ভাই-বোনের। দ্বারস্থ হতে হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। ভাই-বোনই এনাপ্লাজমা ও বিউবমিয়া স্পিসিসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়।

প্রাণপণ চেষ্ট সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি তাদের। ২১ দিনের ব্যবধানে মারা যায় রাসেল ও টুম্পা। এরমধ্যে টুম্পা মারা যায় মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায়। এর আগে ৩১ জানুয়ারি মারা যায় ভাই রাসেল। এ নিয়ে গত এক বছরে সাতটি প্রাণি মারা গেল।

টুম্পার মৃত্যুর বিষটি নিশ্চিত করেন বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, গত দুই মাস আগে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন চিকিৎসা করলেও দুই সিংহের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। ফলে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড। এই মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সাইসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর। তাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলাকালে ৩১ জানুয়ারি রাতে মারা যায় সিংহ রাসেল। অপর আক্রান্ত টুম্পা মারা যায় মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায়।

মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, টুম্পার মৃত্যুর পর মঙ্গলবার চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এরপর চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও পার্কের ভেটেরেনারি সার্জনের নেতৃত্বে সিংহী টুম্পার ময়নাতদন্ত করা হয়। এদিন বেলা ২টার দিকে মৃত সিংহী টুম্পার মরদেহ পার্কের মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।

বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত কারণে সিংহী টুম্পা মারা গেছে। মৃত টুম্পার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক তথ্য জানা যাবে।

প্রসঙ্গত, সাফারি পার্কে গত এক বছরে টুম্পাসহ সাতটি প্রাণির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে চারটি সিংহ, দুটি হাতি ও একটি জেব্রা মারা যায়। বিপুল সংখ্যক হরিণ নিখোঁজ রয়েছে।

Leave a Reply

%d bloggers like this: