অপহরণের ২ দিন পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন ২ জেলে

নাফ নদী থেকে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের হাতে অপহৃত দুই বাংলাদেশি জেলে মুক্তিপণ দিয়ে দেশে ফিরেছেন। সোমবার (১০ জুলাই) রাত ১২টার দিকে হোয়াইক্যং উনছিপ্রাং এলাকার সাইফুল হকের ছেলে মোহাম্মদ মানিক (১৮) ও একই এলাকার বখতারের ছেলে সোহেল বদি (১৮) নামের দুই জেলে দেশে ফেরত এসেছেন।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রশিদ আহমেদ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে ওই দুই জেলে ফেরত এসেছেন। তবে তাদের খুব মারধর করা হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজন। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

অপহৃত যুবক মোহাম্মদ মানিক বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো আমাদের চিংড়ি ঘেরে যাই। আমাদের চিংড়ি ঘের নাফ নদী সংলগ্ন। হঠাৎ কয়েকজন লোক এসে একটি ডিঙি নৌকায় করে মায়ানমারে অভ্যন্তরের একটি দ্বীপে নিয়ে যায়। ওখানে একটি ঘরের মধ্যে আমাদের হাত পা বেঁধে মারধর করে। মূলত কিছুদিন আগে আমাদের এলাকার বাসিন্দা নবী হোসন গ্রুপের সদস্য “জামাল” (এজেন্ট) এর একটি ইয়াবার চালান খালাস হাওয়ার সময় বিজিবির হাতে আটক হয়। আমরা বিজিবিকে সহোযোগিতা করেছি মনে করে জামাল আমাদের রোহিঙ্গা সন্ত্রসী নবী হোসন গ্রুপের হাতে তুলে দেন।

অপহৃত যুবক আরও বলেন, আমাদের যখন মারধর করা হয় তখন জামাল কল করে বলছিলেন আমাদের যেন হত্যা করা হয়। পরে যে ইয়াবার চালান আটক হয়েছিল সেটার ক্ষতিপূরণ দিয়ে আমরা ফিরেছি।

উনছিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা হামিদ বলেন, জামাল রোহিঙ্গা সন্ত্রসী নবী হোসন গ্রুপের এজেন্ট। নবী হোসন গ্রুপের যত ইয়াবার চালান আসে সব জামালের মাধ্যমে আসে। এই ইয়াবার চালান নাফ নদী থেকে ক্যাম্প পর্যন্ত এনে দিলে সেটার জন্য একটি মোটা অংকের টাকা দেন জামাল। এই লোভে জেলেরা এসব কাজে জড়িয়ে পড়েন। যদি ইয়াবার চালান আটক হয় তাহলে তাদের বন্দক রেখে নতুন ইয়াবার চালান আনে জামাল। জামালের কারণে আমাদের এলাকার আরও অনেক বাসিন্দা রোহিঙ্গা সন্ত্রসীদের কাছে বন্দী আছেন।

হোয়াইক্যং ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (আইসি) রোকনুজ্জামান বলেন, আমি মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানি না। হয়তো অভিযানের কারণে সন্ত্রাসীরা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

Leave a Reply