কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) গুলিতে আহত টেকনাফের জেলে মো. হোসেন আলী (৫০) মারা গেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বালুখালী গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল শুক্কুরের ছেলে।
২২ মে সন্ধ্যায় নাফ নদীর হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারিঙ্গা ঘোনায় মাছ ধরতে গেলে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নিহত হোসেন আলীর ছেলে আমির হামজা আজ মঙ্গলবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে মরদেহ নিয়ে তাঁরা টেকনাফের পথে রওনা দিয়েছেন।
টেকনাফের হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. শাহদাত হোসেন সিরাজী বলেন, আজ রাতে মরদেহ টেকনাফ পৌঁছাবে। হত্যার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পরিদর্শক মো. শাহদাত হোসেন বলেন, আরাকান আর্মির গুলিতে হোসেন আলী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হোসেন আলীকে প্রথমে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, টানা তিন মাসের চলমান যুদ্ধে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বড় একটি এলাকা আরাকান আর্মি দখলে নেয়। এর মধ্যে রয়েছে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিপরীতে রাখাইন রাজ্যের বলিবাজার এলাকাও। দুই মাস আগে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি সীমান্তচৌকি দখলে নিয়ে সেখানে পাহারা বসায় আরাকান আর্মি। ২২ মে সন্ধ্যায় হোসেন আলী নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরতে গেলে আরাকান আর্মি কয়েকটি গুলি ছোড়ে। তাতে হোসেন আলীর ডান পায়ের হাঁটু এবং বাঁ পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে।