ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠছে সাগর

ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর প্রভাবে ধীরে ধীরে উত্তাল হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগর। বেড়েছে জোয়ারের পানি। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে কক্সবাজার শহরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সকালে কক্সবাজার উপকূলে ৬ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

এমন বৈরী পরিবেশের মধ্যেই পর্যটকেরা ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সমুদ্রে গোসল করতে নামছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফগার্ড কর্মীরা নানাভাবে চেষ্টা করেও পর্যটকদের সমুদ্র থেকে তুলে আনতে পারছেন না।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, উত্তাল সমুদ্রেই শতশত পর্যটক সাগরে গোসল করতে নেমেছেন। এ সময় বেসরকারি লাইফগার্ড প্রতিষ্ঠান সি সেফ লাইফগার্ডের অন্তত ২০ জন কর্মীকে বালুচরে দাঁড়িয়ে বাঁশি বাজিয়ে পর্যটকদের উঠে আসার জন্য আহ্বান জানাতে দেখা গেছে। এ ছাড়া উত্তাল সাগরে নামতে নিষেধ করে সৈকতে একাধিক লাল নিশানা (পতাকা) ওড়ানো হলেও সেদিকে কারও নজর নেই।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭, কক্সবাজারে ৬ ও মোংলায় ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধস হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

সি সেফ লাইফগার্ডের কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ভুট্ট বলেন, এ মুহূর্তে সাগর খুবই উত্তাল। আমরা লাল পতাকা দিয়ে সংকেত বুঝানোর চেষ্টা করলেও পর্যটকরা তা মানছেন না। এ সময়ে রিপ কারেন্ট বেশি হয় যার কারণে ভেসে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি।

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক জিকু বলেন, সাগরে গোসল করতে নেমেছিলাম। কিন্তু অনেক স্রোত। যার কারণে গোসল না করে উঠে আসলাম।

আবহাওয়া অফিসের সবশেষে তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হতে পারে।

Leave a Reply