ডিভিশন বাতিল : কনডেম সেলে প্রদীপ ও লিয়াকত

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কারাগারের কনডেম সেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে নেওয়া হলে তাদের দুজনকে কনডেম সেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাদের দুজনের ডিভিশনও বাতিল করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার নেছার আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

কোনো ব্যক্তি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হলে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী মামলার রায় হওয়ার সাতদিনের মধ্যে সব নথি, কেস ডায়েরি, সাক্ষ্যপ্রমাণসহ কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠাতে হয়। এ সময় ‘লালসালু’ দিয়ে বিশেষ ধরনের প্যাকেট করে এসব কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠাতে হবে। এ কারণে নিয়মানুযায়ী মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মামলার রায়ের কপিও সেভাবে হাইকোর্টে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজারের সিনিয়র আইনজীবী ও সিনহা হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির আদেশ হাইকোর্টকে অবহিত করতে হয়। হাইকোর্টকে অবহিত না করা পর্যন্ত কার্যকর হবে না। এ ছাড়া আসামিপক্ষ তো আপিল করতে পারে। মামলায় সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার এখতিয়ার সবার রয়েছে।’

এদিকে, গতকাল সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বরখাস্তকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। খাবার থেকে শুরু করে সব সুযোগ-সুবিধা জেল কোড অনুযায়ী হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেল সুপার নেছার আলম। তিনি জানান, প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে জেল কোড অনুযায়ী প্রদীপ ও লিয়াকত কারাগারে ডিভিশন পেতেন। এই দুজন হত্যা মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় তাদের কারাগারের ডিভিশন বাতিল করা হয়েছে।

গতকাল (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া মামলার অন্য ছয় আসামি উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং চারজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের জেল দেওয়া হয়। তারা হচ্ছেন কনস্টেবল সাগর দেব, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। এ ছাড়া এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, পুলিশের কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও পুলিশের কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত। পরে সন্ধ্যায় পুলিশ ভ্যানে করে তাদের সবাইকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

Leave a Reply