সমুদ্রের পাড়ে ‘জলবায়ু শপথ’ নিলেন শতাধিক পরিবেশযোদ্ধা

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাড়ে দাঁড়িয়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশে প্রথমবারের মত ‘জলবায়ু শপথ’ নিলেন শতাধিক পরিবেশযোদ্ধা। রোববার বিকাল ৪ টায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দরিয়ানগর পয়েন্টে এ কর্মসূচী পালিত হয়।

দক্ষিণ এশিয় পাঁচ দেশের উদ্যোগ ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়নস নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) এর সাউথ ক্লাইমেট কনক্লেভ- বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উদ্যোগে জেনল্যাভের আয়োজনে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন’ ভিত্তিক তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের বহুমাত্রিক কার্যক্রমের সমাপ্তি হল এই ‘জলবায়ু শপথ’ গ্রহণের মধ্য দিয়ে।
দেশের বরণ্য শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও জলবায়ুকর্মী, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্টাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ কর্তৃক চারটি বাক্য ও ১১৩ টি শব্দে এই অঙ্গীকারনামা বাংলাদেশের ইতিহাসে অনুষ্টিত প্রথম ‘জলবায়ু শপথ’।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যের দরিয়ানগর পয়েন্টে অনুষ্টিত ‘জলবায়ু শপথ’ অনুষ্ঠানে জলবায়ুকর্মী, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, আদিবাসী সম্প্রদায়, জেলে, কর্মজীবী নারী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জলবায়ুকর্মি ও ফোর্বস খ্যাতিমান কার্টুনিস্ট মোরশেদ মিশু কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারিদের এই জলবায়ু শপথ পাঠ করান।

এতে বলা হয়েছে, “দীর্ঘকাল ধরে পরিবেশ দূষণ পৃথিবীর মাটি, পানি, বাতাস, বৃক্ষজগত ও জীববৈচিত্র্যকে ধংস করে মানবজাতির জন্য যে বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি করেছে। তারা (জলবায়ু শপথ পাঠকারিরা) পৃথিবীর মানুষেরা সেই দুর্দৈবের বিরুদ্ধে অপরাজিত যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে যাবে। পরিবেশের সুস্থতার স্বার্থে পরিবেশবান্ধব যানবাহনের ব্যবহার বাড়াতে চেষ্টা করবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে সচেষ্ট থাকবে। এরই পাশাপাশি পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি ও জ্বালানি ব্যবহার করে, খাদ্যের অপচয় ও প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধ করে পৃথিবীকে দারিদ্র্য ও দূষণমুক্ত করার প্রয়াস পাবে। পরিবেশ ও জলবায়ুর প্রতি তারা (জলবায়ু শপথ পাঠকারিরা) দায়িত্বশীল মনোভাব গ্রহণ করবে। তাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে প্রকৃতিকে সুস্থ রাখবে এবং পৃথিবীর কার্বণ নিঃসরণ কমিয়ে সুস্থ, সুনীল ও বাসযোগ্য ধরিত্রী গড়ে তুলবে। ”
‘জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন’ ভিত্তিক এই তিন দিনের সম্মেলনের শনিবার দ্বিতীয় দিনে অংশগ্রহনকারিরা সাইট ভিজিট হিসেবে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের রাস্তারপাড়া জেলে পল্লী সরেজমিন পরিদর্শন করেন। রোববার সম্মেলনের সমাপনী দিনে সকাল ৮ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত অনুষ্টিত হয় ‘নলেজ স্পেল অধিবেশন’।
জলবায়ু শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, মার্কিন দূতাবাসের কালচারাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার শারলিন হুসেন মরগান, রিভারাইন পিপলস্ প্রতিষ্টাতা শেখ রোকন, ফোর্বস-৩০ আন্ডার-৩০ স্বীকৃতিখ্যাত কার্টুনিস্ট মোরশেদ মিশু, হার্ভাড অর্থনীতিবিদ আমরিন বশির, আইপিডিসি এর প্রধান নির্বাহী মমিনুল ইসলাম,আবিষ্কার ফ্রন্টিয়ার ফান্ডের কান্ট্রি হেড নাজমুল করিম, স্থানীয় সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মানস মন্ডল, পার্টনারশিপ ফর টলারেন্টবএন্ড ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ কর্মকর্তা ফায়সাল বিন মজিদ, ক্রিয়েটিভ অ্যালায়েন্স প্রতিষ্টাতা শাহরিয়ার সিজার রহমান, সিবিএম আয়ারল্যান্ড থেকে মাহবুব কবির এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ নাজিম সহ বিশিষ্টজনরা।

Leave a Reply